সাত বছর পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। বহুল প্রতীক্ষিত এ নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, সমর্থকদের উচ্ছ্বাস এবং ভোটারদের কৌতূহলে ৩২ একরের এই ক্যাম্পাসে নেমে এসেছে এক ভিন্ন আমেজ। দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের সরব অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় ফিরে পেয়েছে হারানো প্রাণচাঞ্চল্য।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত ২৬ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। এরপর দুইদিনে সম্পন্ন হয় প্রাথমিক যাচাই-বাছাই। চলতি মাসের ৮ তারিখে প্রকাশিত হয় প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা। আপিল গ্রহণ ও শুনানির পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪,৪৬২ জন। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন মোট ৬৩ জন প্রার্থী। নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারও রিপোর্ট পজিটিভ হলে বাতিল হবে তার প্রার্থিতা। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর।
নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে প্রচারণার তীব্রতা। প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসের ক্লাসরুম, করিডোর, বিভাগ ও বাদামতলায় ছুটে চলেছেন শিক্ষার্থীদের সমর্থন আদায়ে। লিফলেট বিতরণ, সরাসরি মতবিনিময় এবং ভোটারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এখন তাদের প্রধান কাজ।
এবারের প্রচারণায় চোখে পড়ছে ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল নানা প্রচারপদ্ধতি। কোনো প্রার্থী লিফলেট তৈরি করেছেন টাকার আদলে, যাতে লেখা চাহিবামাত্র ভোট দিতে বাধ্য থাকিবেন। ওই ‘টাকার’ ঠিকানা ‘গকসু ভোটব্যাংক’, ব্যালট নম্বরই সেখানে মুদ্রিত টাকার পরিমাণ। কেউ আবার শুকনো গাছের পাতায় হাতে লেখা লিফলেট বিলি করেছেন। কারও লিফলেটে রঙের বাহার ও ব্যালট নম্বরের শৈল্পিক উপস্থাপন নজর কেড়েছে। সবচেয়ে অভিনব উদ্ভাবন হিসেবে দেখা গেছে গরুর গাড়ির আদলে তৈরি একটি লিফলেট, যেখানে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করলেই পাওয়া যাচ্ছে প্রার্থীর ইশতেহার। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এসব লিফলেট শুধু নজরকাড়া নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে সৃজনশীলতার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পরিবেশ রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা
লিফলেট প্রচারণার ফলে ক্যাম্পাস নোংরা হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকলেও কিছু প্রার্থী ও তাদের টিম তা ঠেকাতে নিয়েছেন উদ্যোগ। যত্রতত্র লিফলেট না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার জন্য স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ সংগ্রহ বক্স। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এমন সচেতনতামূলক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, প্রার্থীরা শুধু প্রচারণা চালাচ্ছেন না, বরং দায়িত্বশীল নেতৃত্বেরও প্রতিচ্ছবি দেখাচ্ছেন।
নির্বাচনকে ঘিরে এখন ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ ও আলোচনা। ক্লাসরুম, করিডোর, লাইব্রেরি, লাঞ্চ ব্রেক বা চায়ের আড্ডা সবখানেই একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, কে হবেন এবার গকসুর নতুন নেতৃত্ব
